Purchase!

প্রেমের কবিতা

নাগরিক জীবনের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারছি না। আমার মতনই
নিরুপায় আর একজন, তার নাম ভালোবাসা।’ (মনবৃক্ষ)
By সাকিরা পারভীন
Category: কবিতা
Paperback
Ebook
Buy from other retailers
About প্রেমের কবিতা
নিমফুল মুক্তি চায় কালো বিড়ালের হাত থেকে
‘নাগরিক জীবনের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারছি না। আমার মতনই
নিরুপায় আর একজন, তার নাম ভালোবাসা।’ (মনবৃক্ষ)
প্রেমে পড়লে সবাই কবিতা লেখেন, কিন্তু কবি কখন প্রেমের কবিতা লেখেন? অপ্রেমে লেখেন, ঘৃণাতে লেখেন, প্রেম থেকে মুক্তির তরেও কি লেখেন? প্রেমের কবিতার সাথে দেখি মিলেমিশে থাকে অপ্রেম আর প্রেমহীনতা! সমাজ আর সময়টাই বৈরি। সাকিরা পারভীন তাই প্রেমের কবিতাতেও লেখেন-
‘মেলাতে পারি না মডেলিং আধুনিক উলঙ্গপনা
রংধনু থেকে রং চুরি যায় দেখে না ললনা
ফাঁসির কাষ্ঠে নয় অপরাধী ঝোলে পোস্টারে
হাইকোর্ট বসে থাকে চুপচাপ আমি একধারে।’ (পররাষ্ট্রনীতি)
প্রেমের এই উচ্চারণে সমাজ সচেতনতা ও দায়বোধ আছে, তবে প্রেমহীনতাও কম নেই।
‘টিপ’ কবিতায় জন্ম-মৃত্যু যে কোন মুহূর্তে শরীরের সবখানে টিপ চায় কবি। আবার ‘দাগ কবিতায় প্রেম আসে জীবনভর নানা দাগ নিয়ে। তবে সবচেয়ে বেশি করে প্রেম আসে তার কবিতায় ‘নিমফুল’ হয়ে কিংবা কে জানে কবিই নিজেই হয়তো ‘নিমফুল’। সেই ‘নিমফুল’ প্রেম ও বিশুদ্ধতা অথবা তিক্ততার প্রতীক যদি হয় তবে তার কবিতায় বিড়ালও আসে বারবার ধ্রুপদী পথের বাধা হয়ে। কিন্ত এ সবের সরলীকরণ করা কঠিন। বরং প্রত্যেক পাঠকেরই সুযোগ আছে নিজস্ব ব্যাখার। সেই বিবেচনায় সাকিরা পারভীনের কবিতা থেকে নিমফুল আর বিড়ালের কিছু কথা বলি, যদি পাঠক কোনো সূত্র ধরতে পারেন-
‘তোমার অদ্ভুত নিম
গাছ থেকে
দু-চারটে ফুল
আমাকেও দাও,
আমার কিম্ভুত সুখ
সারি ডাকে
আবডালে একা
শুনতে কি পাও?’ (সুখসারি)
‘এখন ফাল্গুন মাস। ফাল্গুনের দোষেই ঝরে পড়ছে সহস্র নিমফুল।’ (মনবৃক্ষ)
‘আজ রাতে নিমফুলের সমস্ত মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু ছিল অনাকাক্সিক্ষত ভালোবাসার প্রস্তাব।’
... ‘তাহলে নিমফুলের একটা ইনডিসেন্ট প্রস্তাব তুমি গ্রহণ করো।’ (নিঃশ্বাসের মতন অবিশ্বাসী)
‘তবু তোমার অনুমতি ভিক্ষে চাইছে নিমফুল।’ (আর একটা টেলিফোন)
‘নির্ঘুম রাতের ঝঞ্ঝাট ঝামেলা নিমফুল তেতো, অবিশ্বাসী স্মৃতি-গন্ডগোল থেমে যেত।’ (ঘুম)
‘তবু তোমার অনুমতি ভিক্ষে চাইছে নিমফুল।’ (আর একটা টেলিফোন)
‘নির্ঘুম রাতের ঝঞ্ঝাট ঝামেলা নিমফুল তেতো, অবিশ্বাসী স্মৃতি-গন্ডগোল থেমে যেত।’ (ঘুম)
‘ওই দেখÑ তোমার রাগান্বিত আবদারের তিলেখাজা পাজাকোলা করে ঢেকে রেখেছে নিমফুল।’ (দেয়াল)
‘প্রমত্ত নিমফুল চায়, তুমি রোজ রোজ টাঙিয়ে রাখা অবাধ্যতার আরোগ্য লাভ করো।’(দেয়াল)
‘কোথাও গিয়ে বনসাই বানাবার দরকার নেই। ওইসব গাছেরা জানবে না নিমফুলের মতন তোমারও হাত পা কেটে কেটে রক্তাক্ত করা হবে।’ (বনসাই ভালোবাসা)
‘অথচ পাখিটাকে ছোঁবার জন্য নিমফুলের অনবরত হাঁসফাঁস লুটিয়ে পড়ছিল ধূলায় ধূলায়।’ (বিলাপের বাতাস)
‘এই তো সেদিন, মাত্র ন’বছর আগে ট্রিগারে আঙুল লাগিয়ে প্রকাশ্যে গুলি করতে করতে ঢুকে পড়লে নিমফুলের মহল্লায়।’...‘সেই যে বিড়ালের মত ছন্নছাড়া আবদারের মিঁয়াউ তোমায় পেয়ে বসল নিমফুল, আর তো ছাড়তে পারলে না।’ (আম্রপালি ভালোবাসা)
‘হঠাৎ বিড়াল এলো, কালো মেঘে লন্ডভন্ড ঝড়।
আর আমি ভয়ে ঠান্ডা রুটির মতো জড়োসড়ো
খুঁজে ফিরছি প্রস্থানের পথ।’ (আশ্বাস)
‘বেঁধেছ পরানে বিরামবিহীন জ্বর
এই এত রাতে সবচেয়ে ভালো ঘর
দরজা-বিহীন ঠিকানা বদলে নিও
আমি নই কালো বিড়ালের মিঁউ মিঁউ
জব্দ করেছ পিঁপড়ের ঘরবাড়ি
মৃত্যু আহত হাইকোর্টে রুল জারি’ (তোমার সময় সময়ের চেয়ে দামি)
উদ্ধৃতির সংখ্যাগুলো বেশি হয়ে গেলো, কী আর করা সাকিরার কবিতায় নিমফুল আর বেড়ালের প্রবেশ অথবা অনুপ্রবেশও তো কম নয়। আরো আছে স্মৃতি কাতরতা, অভিমান, অন্য কোন জীবনের টান। আঁইচগাতি গ্রাম আসে স্মৃতি কাতরতা নিয়ে একাধিকবার।
‘রূপসা নদীর পাড়ে শীতল আঁইচগাতি গ্রাম
স্মৃতি কাতরতা দূরে নিঃশ্বাস ক্লান্ত অবিরাম।’ (আঁইচগাতি গ্রাম)
আঁইচগাতি গ্রাম দুঃখ দিলেও সে সদাই টানে কবিকে। অন্যদিকে শহর খানিকটা নিষ্ঠুরই তার কবিতায়, শহর যেমন হয়। স্থানাভাবে উদাহরণ দেয়া মুশকিল, তবে না বললেই নয়, কবিতায় প্রতীকের ব্যবহার তিনি অবিরাম করে যান। সে এক অন্য মজা, চেনাসব কিছুর আদলটা ভিন্নতর ও গভীরতর হয় তার কবিতায় প্রতীকে। ‘ফাইল’, ‘তালাচাবি’, ‘বিবিএ’, ‘দাগ’, ‘সংবিধান’, ‘এনজিওগ্রাম’ ইত্যাদি কবিতার বিষয়গুলো শিরোনামের চেয়েও গভীর প্রতীকে অর্থ বহন করে।
পাঠক নিমফুল আর কালো বিড়ালের জগতে নিমন্ত্রণ।

মুম রহমান
Creative Dhaka
  • Copyright © 2025
  • Privacy Policy Terms of Use